পাবনা প্রতিনিধিঃ পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলা মুলাডলি ইউনিয়নে গভীর রাতে বসতবাড়ীতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ডাকাতরা প্রায় ১০ ভরি স্বর্ণ ২ ভরি রূপার অলংকার এবং নগদ সাড়ে তিন লাখ টাকা লুটে নিয়েছেন বলে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা দাবি করেছেন।
শুক্রবার (৪ঠা এপ্রিল) রাত আনুমানিক ৪ টার সময় উপজেলার মুলাডুলি ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের বেদুনদিয়া এলাকায় জিয়াউর রহমান শাহ এর বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী জিয়াউর রহমান শাহ ওই এলাকার আক্কেল আলী শাহ এর ছেলে। তিনি পেশায় একজন মোটরগাড়ী চালক এবং ব্যাবসায়ি।
ভুক্তভোগীর ছোট ভাই রুবেল শাহ বলেন, প্রতিদিনের মতো বড় ভাই জিয়াউর রহমান তার প্রাইভেট কার গ্যাস রিফিল করতে অরণকোলা গ্যাস পাম্পে যায়। যাওয়ার সময় ভবনের প্রধান ফটক বাহির থেকে শুধু ভিরিয়ে দিয়ে রাখে। রাত আনুমানিক ৩ টা ৫০ মিনিটের দিকে সংঘবদ্ধ ডাকাত দেশীয় অস্ত্র (বড় রামদা) এবং পিস্তল হাতে মুখোশ পড়ে আমাদের বাড়ির দোতলায় প্রবেশ করে। তারা অস্ত্রের মূখে আমাদের জিম্মি করে এবং সকলকে বেঁধে সোনার গহনা ও নগদ টাকা লুটে নিয়ে চলে যায়।
ঈদে শ্বশুর বাড়ীতে বেড়াতে আসা জিয়ার ছোট বোনের স্বামী জুয়েল বলেন, গভীর রাতে হঠাৎ অপরিচিত মানুষের ধমকে আচমকা আমাদের ঘুম ভেঙ্গে যায়। ঘুম থেকে জেগেই শুনি “আমরা ডাকাত” যা কিছু আছে চুপচাপ দিয়ে দে, নইলে জীবন শেষ করে ফেলব। এই বলে তারা গামছা ছিঁড়ে আমাদের মুখ হাঁ করিয়ে মুখ বেঁধে ফেলে। এরপর ঘরের আলমিরা, ওয়্যারড্রোবসহ সকল আসবাবপত্র তল্লাশী করতে থাকে।
জিয়ার স্ত্রী নাসরিন বেগম বলেন, আমাকে অস্ত্রের মুখে রেখে গায়ের সোনার গহনা খোলার চেষ্টা করলে আমি ডাকাতদের বাঁধা দেই।
প্রাণভয়ে নিজেই আমার এবং আমার মেয়ের শরীরের সকল অলংকার খুলে তাদের হাতে তুলে দেই। সেসময় আমার দেবরসহ বাড়িতে থাকা অন্য সদস্যদের হাত, পা এবং মুখ বাঁধা ছিল।
তিনি আরও বলেন, আমার অলংকার খুলে দেয়ার পর আমি দোতলা থেকে নিচে নামার চেষ্টা করলে সিঁড়িতে অবস্থানরত ডাকাত দলের ৫ম সদস্য আমাকে বড় রামদা দেখিয়ে কেটে ফেলার হুমকি দিয়ে রুমে ফেরৎ পাঠিয়ে দেয়। সকলের নিরাপত্তার কথা ভেবে ভয়ে চিৎকার করতে পারি নাই।
ভুক্তভোগী জিয়াউর রহমান বলেন, বাড়ির কাছে গ্যাস স্টেশনে রাতে চাপ না থাকায় আমি সব সময়ই এমন সময়ে গ্যাস তুলতে যাই। আমার আরেক ড্রাইভার পাম্পে এসে বলল যে, আমার বাড়ির সামনে একটি প্রাইভেট কার দেখেছে। আমি বিষয়টি কানে নেইনি। তবে বেশ কিছুক্ষণ পর বাড়ী থেকে ফোন পেয়ে জানতে পারলাম, বাড়ীতে ডাকাতি হয়েছে। দ্রুত বাড়িতে এসে জানতে পারি আমার নগদ সাড়ে ৩ লাখ টাকা, প্রায় ১০ ভরি স্বর্ণের ও ২ ভরি রূপার অলংকার এবং মোট ৬ টি স্মার্ট ফোন ডাকাতরা নিয়ে গেছে।
ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শহীদুল ইসলাম শহীদ বলেন, ডাকাতির ঘটনা শুনে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। যাচাই-বাছাই শেষে আইনী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে জানান তিনি।