নিজস্ব প্রতিবেদকঃ "একটি পৌরসভা, যেখানে জনগণের ট্যাক্সের টাকায় উন্নয়ন হওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে সেখানে লাগাতার চলেছে অনিয়ম, দুর্নীতি আর স্বজনপ্রীতির রাজত্ব। কুমিল্লার হোমনা পৌর মেয়র এডভোকেট নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে উঠে এসেছে ভয়াবহ সব অভিযোগ। আজ আমরা তুলে ধরবো সেই অজানা ভয়াবহ সব অভিযোগের চিত্র।"
কুমিল্লার হোমনা উপজেলার পৌর মেয়র মো: নজরুল ইসলাম গত ১৬ বছরে এমন কোনো অনিয়ম নেই যা তিনি করেননি। নিয়োগ, বদলি, টেন্ডার, জমি ও প্লট বাণিজ্য থেকে শুরু করে পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের প্রত্যেকটি প্রকল্পের কাজ থেকে পার্সেন্টেজ নিতেন। সিলেকশন নির্বাচনে টিকিট বিক্রি করে প্রায় শত কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন সাবেক মেয়র নজরুল।
"২০১৭ সালে পানি শোধনাগার নির্মাণের জন্য হোমনা পৌরসভা জমি কিনে ৫১ লাখ ৫০ হাজার টাকা খরচ দেখায়। অথচ বাজেটে বরাদ্দ দেখানো হয় ৮৬ লাখ টাকা। অর্থাৎ, ৩৪ লাখ টাকার অস্বচ্ছ লেনদেনের অভিযোগ স্পষ্ট। শুধু তাই নয়, দুটি দাগে জমি কেনা হয় ৯০ বছরের লিজে, যা আইনি দিক থেকে প্রশ্নবিদ্ধ।"
"এই টাকা কোথায় গেল? জনসাধারণের জানার অধিকার আছে। দুর্নীতি যে হয়েছে, তার প্রমাণ দলিলে আছে" বলে জানান স্থানীয়রা।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী শাসনের অবসানের মধ্য দিয়ে শেষ হয় নজরুলের এই লুটের অভিযান। এরপর থেকে একে একে বেরিয়ে আসে সাবেক মেয়রের যত অপকর্ম ও সম্পদের বিবরণী। জানা যায়, নজরুলের দুর্নীতির ছোঁয়ায় পৌরসভার একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীও প্রায় কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন তার সময়ে।
"পৌর মার্কেটে দোকান বরাদ্দে ঘুষ ও স্বজনপ্রীতির রাজনীতি চলেছে ১৫ থেকে ১৭ বছর। নিয়মিত টেন্ডার না দিয়ে অবৈধ নিয়মে মেয়রের আত্মীয়দের নামে বরাদ্দ দিয়েছেন ১০ থেকে ১৫টি দোকান। এছাড়াও তার বিনিময়ে গোপনে নেয়া হয় মোটা অঙ্কের ঘুষ।"
স্থানীয় দোকানিরা জানান, "আমরা আবেদন করেছিলাম, কোনো লাভ হয়নি। পরে শুনি টাকা দিলে দোকান মেলে। এটা কি উন্নয়ন?"
"পৌরবাসীর অভিযোগ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পানি সরবরাহ, এমনকি স্যানিটেশন ব্যবস্থাও বিপর্যস্ত। পৌরসভা সেবা দিতে ব্যর্থ হলেও, মেয়রের বিলাসিতা আর কালো টাকার পাহাড় গোড়ে গেছেন শত কোটি টাকার বনে।"
"পৌরসভার একাধিক ওয়ার্ড কাউন্সিলরের অভিযোগ টিকিটের মত বিক্রি করেছেন কাউন্সিলরের পদ। এছাড়াও অনেকের কাছ থেকে নিয়েছেন প্রায় ১০ লক্ষ টাকা"
এদিকে পৌর লুটের মাষ্টারমাইন্ড কথিত এডভোকেট সাবেক পৌর মেয়র নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে স্বাক্ষ্য দিয়েছেন একাধিক রাজনৈতিক ব্যক্তি। নজরুলের দুর্নীতি ও অবৈধ কালো টাকার পাহাড় গড়া বাস্তব ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন পৌরসভার সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলররা।
"গত ১৬ বছরে এসব অবৈধ সম্পদ ও কালো টাকা দিয়ে একাধিকবার বাগিয়ে নিয়েছেন পৌর শাসকের মত একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ মেয়র।
সত্য কখনো কোনদিন চাপা থাকে না, আর সেই সত্যকেই খুজতে বেরিয়ে এসেছে আরো ভয়াবহ প্রতারণা। অনুসন্ধানে জানা যায়, এডভোকেট না হলেও স্বৈরাতন্ত্রকে কাজে লাগিয়ে, অবৈধ টাকার বিনিময়ে আর স্থানীয় ক্ষমতার জোড়ে রাতারাতি নামের প্রথমে বসিয়েছেন এডভোকেট পদবীর মত গুরুত্বপূর্ণ পরিচয়।
এতকিছুর পরও খান্ত হননি নজরুল। ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে আর ক্ষমতার মসন্দে বসে থাকা সাবেক সংসদ সদস্যকে ভুলভাল তথ্যদিয়ে আদায় করেছেন স্ত্রীর জন্য একটি সোনার হরিণ আর সেই হরিণে বসে দিব্বি বহাল তবিয়তে রয়েছেন বাগিয়ে নেয়া সরকারি চাকুরীজীবী সাবেক মেয়র নজরুলের স্ত্রী।
জানা যায়, সাবেক মেয়র নজরুলের স্ত্রী পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রাণালয়ের অধিনে উপজেলা স্বাস্থ্য কপ্লেক্সে চাকুরিরত আছেন।বাগিয়ে নেয়া এই সরকারি চাকুরীজীবী সাবেক মেয়র নজরুলের স্ত্রী কর্মস্থলে না গিয়েও বেতন নিচ্ছেন বলে অভিযোগ স্থানীয় একাধিক ব্যক্তির।
"এই অভিযোগগুলো নিয়ে মেয়রের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তা সম্ভব হয়নি। অন্যদিকে, তার ঘনিষ্ঠ সূত্র বলছে—সবই রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ষড়যন্ত্র।"
"স্থানীয় রাজনীতিতে প্রভাবশালী হলে দুর্নীতিও আড়াল হয়ে যায়। তদন্ত না হলে জনগণ কখনো সত্য জানবে না।"
"হোমনার জনগনের প্রশ্ন—জনপ্রতিনিধিই যদি তাদের টাকা আত্মসাৎ করেন, তাহলে তারা যাবেন কোথায়? এখন সময়, প্রশাসনের জবাবদিহিতার। কারণ, দুর্নীতি চেপে রাখলে, আগামী প্রজন্মও অন্ধকারেই থাকবে।"