
হবিগঞ্জ (বানিয়াচং) প্রতিনিধিঃ হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে ৬ বছরের শিশু বাচ্চা ধর্ষনের ঘটনায় ধর্ষণকারী দুই বখাটেকে গ্রেফতার করে থানা পুলিশ। হাসপাতালের বেডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছে শিশুটি এমন খবরও পাওয়া গেছে। শিশুর পরিবারের এমন পরিস্থিতির মধ্যে এলাকাবাসীর কাছ থেকে জানাযায়, শিশুর অসুস্থ থাকা পিতা দুলাল মিয়া মৃত্যু বরণ করেছেন।
তারা জানান, সোমবার (১০ মার্চ) দুপুর আনুমানিক ১২টার দিকে দুলাল মিয়া(৫৫)নিজ বাড়িতে মারা যান। দীর্ঘদিন তিনি অসুস্থ অবস্থায় অন্যর কাছ থেকে সাহায্য সহযোগীতা নিয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে চলে আসছিলেন। নিহত দুলাল মিয়া উপজেলা সদরের ৪নং দক্ষিণ পশ্চিম ইউনিয়ন এর ৩নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ যাত্রাপাশা গ্রামের বাসিন্দা।
গতকাল ৯ মার্চ(রবিবার) বিকালের দিকে তার শিশু বাচ্ছাকে এলাকার দুই বখাটে ১০টাকা হাতে দিয়ে পার্শ্ববর্তী ডালি গাছের নিছে মুক্তা গাছের ঝোপের ভিতরে নিয়ে যায় এবং সেখানে দুই বখাটে শিশুটাকে ধর্ষণ করে। শিশুর চিৎকার শুনে এলাকার লোকজন এগিয়ে এলে ধর্ষণকারীরা দৌড়ে পালিয়ে যায়। আহত অবস্থায় শিশুকে উদ্ধার করে বানিয়াচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা করা হয়। পরে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে পাঠানো হয়।
বর্তমানে সদর আধুনিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে শিশুটি।
গতকাল নাতনীকে ধর্ষনের ঘটনার অভিযোগে নানী মিনারা বেগম বাদী হয়ে একই এলাকার সাজনান মিয়ার পুত্র নোফায়েল মিয়া(১৭)ও ফরিদ মিয়ার পুত্র শামীম (১৫)মিয়াকে আসামী করে থানায় লিখিত এজাহার দাখিল করেন।
এজাহারে বর্ণিত অভিযোগ এর সূত্র মতে অফিসার ইনচার্জ (ওসি)গোলাম মোস্তাফার নেতৃত্বে একদল পুলিশ গতকা রোববার রাত আনুমানিক ১১টার দিকে ৪নং দক্ষিণ পশ্চিম ইউনিয়ন এর দক্ষিণ যাত্রাপাশা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ধর্ষণকারী দুই বখাটেকে গ্রেফতার করার খবর পাওয়া যায়। অন্যদিকে মাগুরার ৮বছর বয়সী শিশু বোনের বাড়িতে বেড়াতে এসে বোন জামাতা ও বোনের শশুরের ধর্ষনের শিকার হয়ে ৩দিন ধরে ঢাকা সিএমএইচ হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষনে রয়েছে এবং জ্ঞান ফিরেনি বলেও খবর পাওয়া যায়।
এই ঘটনায় সারাদেশে প্রতিবাদের ঝড় উঠে এবং ধর্ষনকারীদের বিরুদ্ধে ফাঁশির দাবি জানিয়ে প্রতিবাদ করে যাচ্ছেন। এই ঘটনায় ৪ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করা হয়।
এদিকে মাগুরা থানা পুলিশ অভিযুক্ত ৪জনকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করেণ। মাগুরায় ৮ বছরের শিশু ধর্ষণের ৩দিন অতিবাহিত হতে না হতেই আবার ৬ বছরের শিশু ধর্ষণ! এমন ঘটনা শুনে যেমন আতংকিত অভিভাবক মহল তেমনি সচেতন মহলের নাগরিকবৃন্দ। থানা পুলিশ শিশু ধর্ষণ এর ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে আমলে নিয়ে ধর্ষণকারীদের গ্রেফতারের প্রশংসা করে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
গতকাল রোববার রাত ৩টায় সেহরির সময়ে ৬ বছরের শিশু ধর্ষনের বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম"ফেইসবুক"পোস্ট করেন অনেকে। এছাড়াও উপজেলা যুবদল নেতা ওহিদুল মুরাদসহ শিশুর পরিবারের পাশে দাড়িয়ে বেশ কয়েকজন সদস্য নিয়ে তাদেরকে সহযোগীতা করার খবর পাওয়া যায়। এমনকি তারাও এই বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে"ফেইসবুক"তাদের আইডি থেকে পোস্ট করলে বিষয়টি ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে পড়ে। এবং ধর্ষণ কারীদের বিরুদ্ধে নিন্দার ঝড় উঠে ও সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁশি দাবি করেন।
এদিকে বানিয়াচং থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি)সহ সকল পুলিশ সদস্যদেরকে অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী বিএনপি'র কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সিলেট বিভাগের সাবেক দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক ও হবিগঞ্জ (০২-আসন) বানিয়াচং আজমিরীগঞ্জ এর সংসদ নির্বাচনের বিএনপি প্রার্থী ডাঃ সাখাওয়াত হাসান জীবন।
তিনি আরও বলেন,তারা বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে দেখার জন্য দ্রুত সময়ের ভিতরে ধর্ষণকারীদের গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে। তাদেরকে সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্হা নিশ্চিত করে আদালতে প্রেরণ করার কথাও বলেন। এছাড়াও ডাঃ জীবন এই শিশুটির সকল চিকিৎসার দায়িত্ব গ্রহণ করার বিষয়টি নিশ্চিত করেন দলীয় নেতৃবৃন্দ।
এব্যাপারে বানিয়াচং থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি)গোলাম মোস্তফার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, রাতে তিনি নিজে পুলিশ নিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করেছেন। গ্রেফতারকৃতদের শিশু ধর্ষনের অভিযোগে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হবে।
এদিকে শিশুর পিতা দুলাল মিয়ার মৃত্যুর বিষয়ের সত্যতা নিশ্চিত হতে,ইউপি সদস্য (মেম্বার) বাবলু মিয়া। তার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন,এমনিতে দুলাল মিয়া দীর্ঘদিন ধরে অসুস্হ হয়ে সাহায্য সহযোগীতা নিয়ে পরিবার নিয়ে কষ্ট করে দিনাতিপাত করতেন। এই অবস্থার মধ্যে গতকাল ৬ বছর বয়সী শিশু বাচ্চার সাথে অ-মানুষিক নির্যাতনের ঘটনার পর থেকে বাকরূদ্ধ হয়ে পড়েছেন সম্ভবত। এমনিতেও অসুস্থ এর মধ্যে আবার নিজের শিশু বাচ্চার কষ্টেও হয়তো মারা যেতে পারেন। এখন আল্লাহ্ পাক ঐ ভালো জানেন।